বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবানে বসেছে পোড়াদহ মেলা। দলবেঁধে মানুষ ছুটছেন মিষ্টি পট্টির দিকে। সেখানে রয়েছে বড় মাছ! তবে এই মাছ জ্যান্ত নয়, মাছের আদলে তৈরি বড় মিষ্টি!
বরাবরের মতই মেলার ঐতিহ্য মাছের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে বড় বড় ‘মাছ’ আকৃতির মিষ্টি। যা সবার কাছে ‘মাছ মিষ্টি’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত। আর বাহারি এসব মিষ্টির ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে মেলার চারপাশে।
সবমিলে মাছের পাশাপাশি বাহারি মিষ্টির আলাদা একটা সুনাম রয়েছে এ মেলায়। তাই মাছ ‘মাছ’ মিষ্টি ঘিরে চলে যত উৎসব।
বুধবার বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ইছামতি নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় অনুষ্ঠিত ‘পোড়াদহ’ মেলায় নিমন্ত্রণে আসা জামাই, স্বজন, বিভিন্ন মাছ ও মিষ্টির দোকানির সঙ্গে কথা হলে উঠে আসে এসব তথ্য।
মেলা গ্রাম-বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। আর পোড়াদহ মেলাটি প্রায় ৪শ বছরের পুরনো। স্বভাবতই স্থানীয় ও আশপাশের লোকজনের কাছে এ মেলার আলাদা একটি ঐতিহ্য বহন করে।
বংশ পরম্পরায় প্রতি বছর মেলা উপলক্ষে স্থানীয়রা জামাই-মেয়ে, স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন। তবে তালিকার শীর্ষে থাকে নতুন জামাই-বউ। মেলা করতে শ্বশুর-শাশুড়ির পক্ষ থেকে জামাইবাবুদের সেলামি দেওয়ার প্রচলন এখনও অটুট রয়েছে। যে যার মত সাধ্যানুযায়ী জামাইয়ের হাতে মেলায় যাওয়ার জন্য সেলামির টাকা তুলে দেন।
পক্ষান্তরে জামাইরা নিজের গচ্ছিত টাকা সেই সেলামির টাকার সঙ্গে যুক্ত করে শ্যালক-শালিকাদের নিয়ে মেলায় যান। তবে তাদের দৃষ্টিটা থাকে মাছ ও মিষ্টি ঘিরে। মেলার প্রধান দুই আকর্ষণ কেনার পরই চলে ঘোরাঘুরির পর্ব। এরপর মাছ ও মিষ্টি নিয়ে সোজা শ্বশুরালয়ে ছোটেন তারা।
মেলায় একাধিক মিষ্টি দোকানি জানান, মেলার প্রধান আকর্ষণ মাছ। তাই মাছকে প্রাধান্য দিয়ে প্রত্যেক বারের মতো এবারও ৫-১০ কেজি ওজনের মাছ আকৃতির মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে।
গো নিউজ২৪/এমআর